Small journey

ছোট ছোট ঢেউ জুড়েই সুনামীর সৃষ্টি হয়

সমান্তরাল

অনেক দিন পর আবার লিখলাম সচলায়তনে। লেখাটা অনেকদিন আগেই শুরু করেছিলাম, শেষটা নামানো হয়নি। আজ কি করে যেন শেষ হলো অনেকগুলো শেষ কে ইতি টেনে। লেখক হবার অনেক কষ্ট। লেখারা সারাক্ষণই মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। চরিত্রগুলো এসে মাথার চুল ধরে টানাটানি করে। এই আমারে মারলি ক্যান, ঐ তোর এত্ত বড় সাহস আমার প্রেমিকারে অন্যের লগে বিয়া দ্যাস ইত্যাদী ইত্যাদী।লেখার চেয়ে গ্রাফিক্সটা করে বেশি আনন্দ পেয়েছি। নিজের ডিজাইন দেখে নিজেই মুগ্ধ। সচলায়তনে নিজের নামে লিখতে ভয় লাগে, পাছে রোবোকপের কাছে ধরা পড়ে যাই। কেমন যেন লজ্জা লাগে। তাই অমাবস্যা নামে লিখি। তাছাড়া নিজের নাম বলতে আছেই বা কি, ছিন্নভিন্ন একগাঁদা অস্তিত্ব। নামের প্রসঙ্গ আসলেই সুনীলের সেই কবিতাটা মনে পড়ে যায় " আমার কেউ নাম রাখেনি, তিন-চারটে ছদ্মনামে আমার ভ্রমণ মর্তধামে "। আমার অবস্থাও তাই। বন্ধুরা বলে আমি ঘোলা মন। আমার সবটাই ঘোলা। আমিও ভাবি আসলেই তো সবটাই ঘোলা, কিন্তু ঘোলাটা করলো কে? লিংক টা এখানে http://www.sachalayatan.com/guest_writer/25178

সমান্তরাল


লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২০০৯-০৬-২৪ ১৭:৩৭)
ক্যাটেগরী: |

-খোকা, এই খোকা, সাত সকালে জানালা খুলে রেখেছিস কেন? কতদিন বারণ করেছি হিমে বাইরে যাবিনা। ঠান্ডা লাগবে। কথা শুনিসনা কেন? কবে বড় হবি?

আমার সেকেলে মা। এই চব্বিশ বছরের উঠন্ত যৌবনকেও অনায়াসে কৈশোরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কখনো কখনো বাইরে যাবার সময় একটু ঝাঁড়ফুঁক, যদি কারো নজর লেগে যায়। অনেকটা বড় হয়েও আমি কপালে কাজলের টিপ পড়তাম। ছেলেরা ক্ষ্যাপাতো, কিরে তোর দুধের বোতল কই? মেয়েগুলো অবশ্য কিছু বলতো না। শুধু মিটমিট করে হাসতো। কোন কোন দিন টিপ পড়বো না বলে একটু আগে ভাগেই বাড়ি থেকে বেরোতাম। মা হয়তো গোয়াল ঘরে, কিংবা রান্নাঘরে ব্যস্ত। মোক্ষম সুযোগ।
- মা , আমার স্কুলে দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি গেলাম।
- খোকা, খোকা, শোন,দাঁড়া।
- কি হলো দেরী হয়ে যাচ্ছে তো।
- হোক দেরী, টিপ টা দেয়া হয়নি।
- মা আমি এখন বড় হয়েছি। মা মুখ টিপে হেসে আমার হাফপ্যান্টের দৈর্ঘ্য দেখে নেয়। যেদিন ফুল প্যান্ট পড়বি, সেদিন বুঝবো বড় হয়েছিস। এখন কাছে আয় টিপ পরিয়ে দেই।
-মুখটা হাঁড়ির মত করে শক্ত করে দাঁড়িয়ে থাকি। ভরা র্পূণিমার চাঁদের মত আস্ত একটা টিপ আমার কপালের আকাশে আলো ছড়াতে থাকে। আর আমি স্রষ্টার কাছে তারস্বরে প্রার্থনা করি, আল্লাহ্ , তাড়াতাড়ি আমাকে বড় করে দাও। একনিমেষেই যেন স্রষ্টা দিন, মাস, বছর গড়িয়ে আমার অপেক্ষার ক্লান্ত গাড়িকে বয়সের প্লাটফর্ম থেকে হাফপ্যান্ট নামের স্টেশন থেকে ফুলপ্যান্টের স্টেশনে পৌঁছে দেবে।

গ্রাম দেশে ফিডারের প্রচলন তেমন একটা নেই। অনাহারে, অর্ধাহারে আমার মায়ের বুক শুকিয়ে গিয়েছিল সেই আতুঁড় ঘরেই। মার মুখে শুনেছি যতদিন লাল গাভিটার বুকে দুধ ছিল ততদিন বাছুরটা’কে একটু কম খেতে দিয়ে দুধ গুলো সব আমাকে একটা বোতলে ভরে নিপল লাগিয়ে খাওয়ানো হত। মায়ের কোলে শুয়ে নিরেট বোতলটার বুক চিরে অমিয় সুধা টেনে টেনে পান করতাম। আর ঐদিকে গোয়াল ঘরে বাছুরটা আমাকে অভিসম্পাত করতে করতে খইল মেশানো খড়-ভূষি খেয়েই বড় হতে থাকতো। বড় হয়ে অনেক দিন মনে মনে বাছুরটা’কে বলেছি-
-হ্যাঁরে ধলা, তোকে আমি ঠকিয়েছি না? তোর ভাগের দুধগুলো খেয়েই তো আমি বড় হয়েছি। কি করবো বল, আমি যে ঘাস খেতে পারিনা। তুই তো জানিস আমার বাবা নেই। মামাদের কাছ থেকে আর কতইবা নেয়া যায়। তাদেরও তো নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। আমি যদি তাড়াতাড়ি বড় না হই তাহলে কি করে মা’র দু:খ ঘোচাবো বল? তুই তো দেখিস কত কষ্ট আমার মায়ের। মন খারাপ করিস না, আমি যখন বড় হবো, মস্ত বড় চাকরী করবো, তখন তোকে মেলা মেলা দুধ কিনে খাওয়াবো। কিরে , তখন আমায় ভাগ দিবি তো, নাকি একাই সব খেয়ে নিবি?
-খোকা, খোকা, কি করছিস ওখানে?
-ধলা’কে খাওয়াচ্ছি। এই ফাঁকে বলে নেই ধলা বাছুরটার নাম।
-তোর খাওয়াতে হবে না । তুই পড়তে বস।আমি দেবোক্ষণ। কথা না বাড়িয়ে সুবোধ ছেলের মত পড়তে বসে যাই। যাবার আগে ধলাকে হয়তো ফিসফিস করে বলে যাই, ধলা মনে থাকে যেন, তখনকার সব দুধ তোর, আমি একটুও ভাগ নেবোনা, দেখিস।
-খোকা। মা বিরক্ত হয়। ধলার সাথে তোর এত কি কথা রে?
-আমি সূর্যের হাসি হেসে মা’কে বুঝিয়ে দেই ঘটনা অতীব গুরুত্বর্পূণ। তৃতীয় পক্ষের প্রবেশ নিষেধ। মা বুঝে নেয় এ আমার আর ধলার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই কথা না বাড়িয়ে বলে,
-কি জানি, তোর ব্যাপার স্যাপার আমার মাথায় কিছুই ঢোকে না। এখন পড়তে বস।
আমি মাথা নেড়ে বিজ্ঞের মত বলি,
- বুঝলে মা, আমি একদিন মস্ত বড় কিছু হবো, হাতির মত।
মা হেসে কুটিকুটি। তার ছেলে বড় হয়ে কিনা হাতি হবে।
-হ্যাঁ রে হাতি হলে তুই ফুলপ্যান্ট পড়বি কি করে? অতবড় ফুলপ্যান্ট বানাতে দোকানের সব কাপড় ফুরিয়ে যাবে না? মা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ে।আমার ছোট্ট মাথায় কিছুই ঢোকেনা, ভুলটা কি বললাম।

কোন কোন দিন মাথা চুলকে দিদিভাই কে জিজ্ঞেস করি, হ্যাঁরে দিদিভাই, আমি ভুল কি বলেছি বল? মা শুধুই হাসে। দিদিভাই বোঝেনা তার ছোট্ট ভাই বন্ধুটি কি ভুল করলো। গালে হাত দিয়ে পন্ডিতের মত দুই অবুঝ শিশু পৃথিবীর সব জটিলতা উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে যাই।
-শোন খোকা, হাতিরা তো ফুলপ্যান্ট পড়েনা। সার্কাসে দেখিসনি হাতিগুলো উদোম থাকে। বুদ্ধু, বড় হলে কি আর ন্যাংটোপুটু থাকা যায়? আমিও ভাবি ।
-আচ্ছা, হাতিরা না হয় উদোম থাকে কিন্তু বানরগুলো?
এবার দিদিভাই মায়ের চেয়েও বেশি হেসে ওঠে। হাসির ঝলকে ওর মোমের মত ছোট্ট দেহটা মাটিতে গড়াগড়ি খায় আর আমি মুখ শক্ত করে রাগে ফুঁসতে থাকি। মেয়েদের বুদ্ধি আসলেই কম। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মশকরা?
-দিদিভাই। আমি খেঁকিয়ে উঠি।
-কিরে খোকা?
-হাসছিস যে বড়?
-বারে , হাসি পেলে হাসবোনা? আচ্ছা খোকা, তুই বাদঁড়ের মত বড় হয়ে সারাক্ষণ কি এমন করে মুখ ভেংচাতে থাকবি? বলেই দিদিভাই মুখটাকে ভ্যাংচাতে থাকে। দিদিভাই, আমার সবথেকে প্রিয় বন্ধু, প্রিয় সাথী। ছুতোরের মেয়ে বলে ভদ্র সমাজের ছেলেমেয়েরা ওর সাথে মেশেনা। আমি মুসলমানের ছেলে হয়েও কিভাবে যেন ওর ছোট্ট হৃদয়টাকে দখল করে ফেলেছি। একমাত্র শিশুদের কাছেই কোন প্রভেদ নেই। মানুষ যত বড় হয় ততই বৈষম্যর বেড়াজালে একটু একটু করে জড়িয়ে যায়। চাইলেও অনেকসময় এড়াতে পারেনা। যারা পারে তাদের সমাজ অন্য চোখে দ্যাখে ।

সময়ের গাড়ি চড়ে আমি একদিন সত্যিই হাফপ্যান্ট ছেড়ে ফুলপ্যান্টের রাজত্বে পা রাখি।আমি খোকা ভবিষ্যত খোকাদের আবাসস্থল হিসেবে নিজেকে গড়তে থাকি। মা অবাক হয়ে দ্যাখে তার খোকা একটু একটু করে কত বড় হয়ে গেছে। গালের সেই কমনীয়তা নেই। হেমন্তের ধান গাছের পরিত্যক্ত শিকঁড়ের মত সারাটা মুখে খসখস খসখস। হাতগুলোকে নিজের মনে হয় না।চামড়ার দেয়াল ভেদ করে বটবৃক্ষের শাখার মত এখানে ওখানে বেড়ে উঠছে পশমের আস্তরণ। বিব্রত লাগে। নিজেকে কেমন অচেনা মনে হয়। নিজের গলার স্বর শুনে নিজেই চমকে উঠি। একটু মোটা, একটু ভারী ।কয়েকদিনেই আমি খোকা থেকে অন্য মানুষে বদলে যাই। হয়তো দুইশ সত্তর কিংবা চারশ চব্বিশ কিংবা আরো কিছু কমবেশি সূর্য ওঠা। নিজেকে লুকিয়ে রাখি ।পাছে মার চোখে আরো বেশি বড় হয়ে যাই। মায়ের বুকটা ভাবনার নদীতে হারিয়ে যায়। একটু একটু করে খোকা কেমন বদলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে নিজের পেটের উপর হাত বুলিয়ে ভাবতে থাকে এই ছেলেটাকেই সে গর্ভে ধরেছিল কিনা। সদ্য বেড়েওঠা গোঁফের কাটাঁঝোপগুলোর আড়ালে যে মুখটা লুকিয়ে আছে সে যেন খোকা নয়, অন্য মানুষ, অন্য এক খোকা যে পরির্পূণ হবার প্রতিক্ষায় আছে। একটা দীর্ঘশ্বাস জীর্ণ দেয়ালের ঝুলগুলোকে ছুঁয়ে যায়। তার সেই ছোট্ট খোকা কোথায় গেল?

কখনো কখনো অবহেলায় সার-সেচ ছাড়াই মুখের জমিতে ঘন আগাছা জন্ম নেয়। তারপর কোন একদিন সময় বুঝে সেই বনভূমি উজাড় করতে লেগে যাই। জীবনটা যেন কেমন, চলতে চলতে মাঝে মাঝে স্থবির হয়ে যায়।প্রিয়মুখগুলো ঝাপসা হয়ে আসে। ধলা কিন্তু এখন অনেক বড়, রীতিমস্ত আস্ত একটা ষাঁড়। আমাকে মোটেই তোয়াক্কা করেনা। শিং বাঁকিয়ে ফোঁসফোঁস করতে করতে যেন বলে, দ্যাখো খোকা, আমি হাতির মতই বড় হয়েছি। আর তুমি এত এত দুধ খেয়ে কি করলে? মাঝ থেকে দুধগুলো আমি খেলে আরো একটু বেশি সবল হতাম।কলেজ, র্ভাসিটি.........সময় কি করে গড়িয়ে যায়। মায়ের মেঘের মত কালো চুলে রং ধরে। সাদা সাদা, কালো কালো। মাঝে মাঝে ধলার কথাগুলো মনে মনে আওড়াই, হয়তো খইল ভুষি খেয়ে বড় হলেই ভাল হতো। নইলে এত এত দুধ খেয়ে বড় হয়ে ওঠা এই আমি গাঁদা গাঁদা বই পড়েও একটা ভাল চাকরী পেতে হিমসিম খেয়ে যাই।চাকরীর পড়া পড়তে পড়তে আনমনে জানালার ফাঁক দিয়ে কখনো সখনো চেয়ে দেখি ধলা আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে । ওর নীরব চোখের ভাষা যেন চুপচুপ করে বলে যায়
-খোকা,আর কত পড়বে খোকা। একটু তাড়াতাড়ি পড়ো আর যে সয় না। আমি সবভুলে পড়ায় ডুবে যাই। সামনে কত কাজ। শীতের কোন এক সন্ধ্যায় মায়ের পেটের ব্যথাটা হঠাৎ হাই তুলে জেগে ওঠে। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেই। কিডনিতে ইনফেকশন। অপারেশন করতে হবে। অনেক, অনেক টাকা দরকার। জমি-জমা সব বন্ধক রেখেও শেষ রক্ষা হয়না। ডাক্তারের তাগাদা, তাড়াতাড়ি করেন , নইলে আপনার মাকে বাঁচানো যাবে না। বাড়ি ফিরে ক্লান্ত দেহটা'কে বিছানায় এলিয়ে দিতে দিতে বাইরে চোখ রাখি। জ্যোৎস্নার আলোয় ধলার চোখ দুটো চকচক করছে। আমার মনে আশার আলো জ্বলে ওঠে। আমি সব ভুলে যাই।

স্যালাইনের পাইপ চুঁইয়ে চুঁইয়ে জীবনের সার প্রবেশ করছে মায়ের শরীরে। নরম কোমল পাঁপড়ি মেলে মায়ের চোখ দেখছে পৃথিবীর মুখ। আর অন্য দিকে , অন্য একটা ঘরে ধলার টানা টানা চোখদুটো বুঁজে আসছে। কসাইখানার দূর্গন্ধের ভেতর থেকে ধলার শেষ নিশ্বাস হাসপাতালের বেঞ্চে বসে থাকা খোকার চুলগুলোকে এলোমেলো করে দেয়। হাসপাতালের সমস্ত রোগীদের চিৎকার ছাপিয়ে খোকার কানে কানে ধলা যেন বলে যায়, খোকা, আমিতো তোমার ভাই ছিলাম .......................

অমাবস্যা
২৪ জুন, ২০০৯


রি'বা

সুদের আরবী শব্দ রি'বা । এর আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি, আধিক্য, পরিবর্ধন, বেশি , স্ফীত , বিকাশ ইত্যাদী। সুদ ফার্সী ও উর্দু শব্দ যা আরবী রি'বার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাভাষায় বলা হয় কুসীদ। সুদ শব্দটিও বাংলাভাষায় আরবী রি'বার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।ইসলামী শরীয়ায় লেনদেনের ক্ষেত্রে চুক্তির শর্তানুযায়ী শরীয়াহ সম্মত কোনরুপ বিনিময় ব্যতীত মূলধনের উপর অতিরিক্ত যা কিছু গ্রহণ করা হয় তাকে সুদ বলে।

তাফসীরবিদ ইবনে জরীর মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন :" জাহেলিয়াত আমলে প্রচলিত ও কোরআনে নিষিদ্ধ রি'বা হলো কাউকে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঋণ দিয়ে মূলধনের অতিরিক্ত নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ গ্রহন করা। আরবরা তাই করতো এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে সুদ বাড়িয়ে দেবার শর্তে মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হতো।"
( তাফসীরে ইবনে জরীর , ৩য় খন্ড, ৬২ পৃষ্ঠা )

রসূল ( সা ) বলেন, "যে ঋণ কোন মুনাফা টানে তাই রি'বা ।"
( জামে-সগীর )

সুদের শর্ত : ১. লেনদেন ঋণ সংক্রান্ত বিষয় হওয়া।
২. মূলধনের পরিমান নির্দিষ্ট থাকা।
৩. ঋন পরিশোধের সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকা।
৪. ঋন দানের শর্ত হিসেবে অতিরিক্ত কোন কিছু আদায় করা।
৫. অতিরিক্ত যা কিছু আদায় করা হয় তার শরীয়াহ সম্মত কোন বিনিময় না থাকা।
৬. অতিরিক্ত অংশের পরিমান পূর্ব নির্ধারিত হারে আদায় করা।
৭. সময়ের অনুপাতে মূলধনের অতিরিক্ত অংশের পরিমান নির্ধারিত হওয়া।
৮. উপরের বিষয়গুলোকে লেনদেনের শর্ত হিসেবে গণ্য করা।


সূরা আসর

oÔkw AwQk (i~wt AgZyYê), AwtwZ ovLøw: 3


بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

mÖkØ KkxQ AwÁwpzk dwËi xjxd eki KkØYwit, AxZ btwlÖ|

Ayahs: | 1-3 |




وَالْعَصْرِ (1

Koi jÖËMk,

By (the Token of) Time (through the ages),




إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ (2

xdúPt iwdÖn qxZMÞþæ;

Verily Man is in loss,




إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ (3

xKìç Zwkw dt, jwkw xgmðwo þÿwed KËk I ouKiê KËk Ggv ekþekËK ZwKyb KËk oËZøk Ggv ZwKyb KËk ogËkk|

Except such as have Faith, and do righteous deeds, and (join together) in the mutual teaching of Truth, and of Patience and Constancy.




সূরা আসর পবিত্র কোরআনের একটি সংক্ষিপ্ত সূরা কিন্তু এমন অর্থর্পূণ সূরা যে , ইমাম শাফেয়ী (রহ: ) এর ভাষায়, “ মানুষ এ সূরাটিকেই চিন্তা-ভাবনা সহকারে পাঠ করলে তাদের ইহকাল ও পরকাল সংশোধনের জন্য যথেষ্ঠ হয়ে যায় “।এ সূরায় আল্লাহতায়ালা যুগের কসম করে বলেছেন যে, মানবজাতি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ এবং এই ক্ষতির কবল থেকে কেবল তারাই মুক্ত যারা চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে পালন করে - ঈমান, সৎকর্ম, অপরকে সত্যের উপদেশ এবং সবরের উপদেশ দান। দ্বীন দুনিয়ার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার এবং মহা উপকার লাভ করার চার বিষয় সম্বলিত এ ব্যবস্থাপত্রের প্রথমদুটি আত্নসংশোধন সম্পকিত এবং দ্বিতীয় দুটি বিষয় মুসলমানদের হেদায়েত ও সংশোধন সর্ম্পকিত।

প্রথমে প্রতিধান যোগ্য বিষয় এই যে , বিষয়বস্তুর সাথে যুগের কি সর্ম্পক যার কসম করা হয়েছে । অধিকাংশ তাফসীরবিদ বলেন : মানুষের সব কর্ম, গতিবিধি , ওঠাবসা ইত্যাদী সব যুগের মধ্যেই সংঘটিত হয়। সূরায় যেসব কর্মের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেগুলোও এই যুগ-কালেরই দিবারাত্রিতে সংঘটিত হবে। এরই প্রেক্ষিতে যুগের কসম করা হয়েছে।

এখানে আরেকটি বিষয় বিবেচ্য যে মানব জাতির ক্ষতিগ্রস্থতায় যুগ ও কালের প্রভাব কি ?
চিন্তা করলে দেখা যায়, আয়ুষ্কালের সাল, মাস, সপ্তাহ, বছর বরং ঘন্টা-মিনিটই মানুষের একমাত্র পুঁজি যার সাহায্যে সে ইহকাল ও পরকালের বিরাট ও বিষ্ময়কর মুনাফাও অর্জন করতে পারে। এবং ভ্রান্ত পথে চললে এটাই তার জন্য বিপদজনকও হয়ে যেতে পারে।

উপরোক্ত দু’ধরনের উপদেশ সত্যের উপদেশ ও সবরের উপদেশের সারমর্ম এই যে, এক, নিজে ঈমান আনা ও সৎকর্ম অবলম্বন করা এবং অপরকেও তার উপদেশ দেয়া। দুই, সত্যের অর্থ বিশুদ্ধ বিশ্বাস এবং সবরের অর্থ সৎকাজ করা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত বা বেঁচে থাকা।

এ সূরায় মুসলমানদের প্রতি সবচেয়ে বড় নির্দেশ এইযে, নিজেদের ধর্মকে কোরআন ও সুন্নাহর অনুসারী করে নেয়া যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী ঠিক ততটুকুই জরুরী অন্য মুসলমানদেরকেও ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহবান করার সাধ্যমত চেষ্টা করা । নতুবা নিজের আমল মুক্তির জন্য যথেষ্ঠ হবে না, যদিও নিজে পুরোপুরি সৎকর্মপরায়ন হয়। একারণেই কোরআন ও হাদীসে প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি সাধ্যমত সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে এ আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী আমল করার তওফীক দান করুন। আমীন।

সূত্র : তাফসীরে মারেফুল কোরআন
ইসলাম ধর্ম, তাফসীর

ফটোশপ টিউটোরিয়াল : ৩ ট্রান্সপারেন্ট গিফ ইমেজ

ফটোশপ টিউটোরিয়াল : ৩ ট্রান্সপারেন্ট গিফ ইমেজ

পোস্টলিখেছেন ফাহমিদা ইয়াসমিন মঙ্গলবার, জুন ১৬, ২০০৯ ১:০৪ অপরাহ্ন

http://forum.amaderprojukti.com/viewtopic.php?f=57&t=3739&p=30193#p30193
মাঝ রাতে উঠে দেখি রানা বিছানায় নেই।ঘুম ঘুম চোখে এদিক-সেদিক তাকালাম। মনে হলো পিসির সামনে কে যেন বসে । বুঝতে বাকি রইলো না মানুষটা কে । বললাম, " আর যাই করো সকালে বাজার করতে ভুলে যেওনা যেন। শুক্রবারের দিনগুলোতে এমনিতেই ঘুম থেকে উঠতে বেলা হয়ে যায়। তার উপর আর বাজারে যেতে ইচ্ছে করেনা। চোখ মেলে দেখি নয়টার কাঁটা ঘড়িটাকে ছুঁয়েছে। তাড়াতাড়ি উঠে বসি। রান্নাঘরে ঢুকে দেখি ফ্রীজ খালি।স্বভাবত:ই মেজাজ খারাপ। মেহমান আসার কথা। এদিকে রানার কোন সাড়াশব্দ নেই। একশ কি:মি: বেগে ঝড়ের মত ছুটে গেলাম। রানা তখনো বসে। সাড়ারাত জেগে কি করেছো শুনি? বাজারে যাওনি কেন? আমি চিৎকার করে উঠি। রানা আমার প্রশ্নের ধারে-কাছ দিয়েও গেলনা। উল্টো আমাকে প্রশ্ন করলো, দ্যাখো মেঘলা আমি সেই রাত থেকে এত চেষ্টা করছি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডটাকে মুছে দিতে কিন্তু সেভ করার পর সাদা একটা ব্যাকগ্রাউন্ড দেখাচ্ছে। বলতো কি করি ? একে তো শুক্রবারের দিন, তার উপর বাজার করতে ভুলে গেছে। মেজাজ সপ্তাকাশে। কিন্তু গ্রাফিক্সের কথা শুনে মনটা নরম হয়ে গেল। রান্না-বাজার সব ভুলে আমিও রানার সাথে বসে গেলাম পিসির সামনে। এবং অত:পর যা করলাম তুলে দিচ্ছি আপনাদের জন্য । আজ আমরা শিখবো কি করে ট্রান্সপারেন্ট ইমেজ তৈরী করতে হয়। আমরা প্রায়শ:ই দেখি শুধু ছবি দেখা যায় , ব্যাকগ্রাউন্ড দেখা যায় না। এজন্য যা করতে হবে -

প্রথমে একটি ইমেজ নিন।
ছবি

এবার লেসো টুল দিয়ে ইমেজটিকে সিলেক্ট করুন। আপনি চাইলে পেন টুলও ব্যবহার করতে পারেন। Feather - 1 pixel ।

এবার CTRL + SHIFT + I চেপে ডিলিট অথবা ব্যাকস্পেস key চাপুন। এতে করে আপনার সিলেক্ট করা ইমেজের বাকি অংশ মুছে যাবে।
ছবি

এবার CTRL + SHIFT + I চেপে ডিলিট অথবা ব্যাকস্পেস key চাপুন। এতে করে আপনার সিলেক্ট করা ইমেজের বাকি অংশ মুছে যাবে। আমি এখানে ভেতরের অংশটুকু মোছার জন্য Magic wand ( W) ব্যবহার করেছি। এটি দিয়ে সিমিলার কালার খুব দ্রুত সিলেক্ট করা যায়।


নতুন আরেকটি ডকুমেন্ট ওপেন করুন। এবং ব্যাকগ্রাউন্ড TRANSPARENT সেট করুন।
ছবি


এবার আগের ডকুমেন্ট এ সিলেক্ট করা ইমেজটি কপি করে এই নতুন ডকুমেন্ট এ পেস্ট করুন। আপনি চাইলে blur (R ) টুল সিলেক্ট করে ইমেজের চারপাশে একবার করে ড্রাগ করতে পারেন । এতে ইমেজটি অনেক smooth মনে হবে।
ছবি

এবার কি-বোর্ডে CTRL + SHIFT + ALT + S চেপে নিচের সেটিংস অনুযায়ী সেট করুন।
ছবি


ব্যাস হয়ে গেল ।
ছবি


মূল ইমেজ
ছবি

পরিবর্তিত করার পর-

ছবি

ফটোশপ টিউটোরিয়াল : ২ কালারফুল ব্যাকগ্রাউন্ড

কদিন থেকেই সবিতা ভাবছে ওর ছবিটাকে একটু গ্লামারাস করা যায় কিনা। যেই ভাবা সেই কাজ। মায়ের বকুনি সত্বেও পিসির সামনে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘটঘটানি। অবশেষে অনেক ঘেঁটেঘুঁটে যদিও কিছু একটা দাঁড় করালো কিন্তু মনে হচ্ছে কি যেন একটা বাদ পড়ে গেছে । অবশেষে মনে হলো ছবিটাকে একটা কালারফুল ব্যাকগ্রাউন্ডকে সেট করলে মন্দ হয় না :-?

আজ আমরা শিখবো কি করে কালারফুল ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরী করতে হয়।

প্রথমে আমরা একটি ডকুমেন্ট তৈরী করবো। ডকুমেন্ট সাইজ ৮০০ x ৬০০, Resolation ৭২ । এবার নতুন একটি লেয়ার নিন এবং গ্রাডিয়েন্ট টুল সিলেক্ট করে কমলা রং করুন। আপনি চাইলে আপনার পছন্দ মত যেকোন রং নিতে পারেন।

ছবি

এবার নতুন আরেকটি লেয়ার নিন এবং Polygonal Lasso Tool (L) সিলেক্ট করে একটি চিন্হ আকুঁন। ব্রাশটুল সিলেক্ট করুন এবং ফেড ব্রাশ , ৩০০ সাইজ সিলেক্ট করে চিন্হিত অংশের ভেতর একবার ক্লিক করুন। মনে রাখবেন যেন খুব স্ট্রং না হয়। সফট ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে।
ছবি

এবার এই লেয়ারটির ব্লেডিং অপশন ওভারলে করে দিন এবং এর অপাসিটি ৬০% করে দিন।

নতুন আরেকটি লেয়ার নিন এবং আরেকটি চিন্হ একেঁ সাদা-কালো লিনিয়ার গ্রাডিয়েন্ট সিলেক্ট করে ফিল করুন।
ছবি

আগের মত এর ব্লেডিং ওভারলে করে অপাসিটি ১৯% করে দিন। এবং মুভ Move (V) টুল সিলেক্ট করে সামান্য সরিয়ে দিন ।
ছবি

ছবি


আরেকটি লেয়ার নিন। এবার পেন টুল (Pen Tool) সিলেক্ট করুন। এবং একটি কার্ভ আকুঁন। এবার পাথ অপশনে গিয়ে নিচের ছবির মত Load path as a selection এ ক্লিক করুন। এবারে সাদা-ট্রান্সপারেন্ট লিনিয়ার গ্রাডিয়েন্ট সিলেক্ট করে ড্রাগ করুন। ব্লেডিং অপশন ওভারলে এবং অপাসিটি ৫০% করে দিন।

ছবি

ছবি

ছবি

নতুন আরেকটি লেয়ার নিন। পেনটুল সিলেক্ট করে আবারো একটি কার্ভ আকুঁন । ব্রাশ টুল ৪২৫ ডায়ামিটার সেট করে লেয়ার সিলেক্ট থাকা অবস্থায় একবার ক্লিক করুন। আপনি আপনার প্রয়োজন মত ব্রাশ সাইজ ছোট বড় করে নিতে পারেন। কালার # 000000 ।
ছবি

নতুন আরেকটি লেয়ার নিন এবং লেসো টুল সিলেক্ট করে একটি কার্ভ আকুঁন। এবার Ctrl+Shift+I চেপে ইনভার্স করুন । এতে করে আপনার সিলেক্ট করা চিন্হটির বিপরীত অংশ সিলেক্ট হবে। এবার সাদা সফট ব্রাশ সিলেক্ট করে আস্তে আস্তে পিঁপড়ের মত ডট রেখার উপর ড্রাগ করতে থাকুন।

ছবি

আগের সিলেকশন থাকা অবস্হায় নতুন আরেকটি লেয়ার নিন এবং সাদা-ট্রান্সপারেন্ট লিনিয়ার গ্রাডিয়েন্ট টুল সিলেক্ট করে ড্রাগ করুন। ব্লেডিং অপশন ওভারলে এবং অপাসিটি কমিয়ে দিন ।

নতুন আরেকটি লেয়ার নিন এবং Fill color (G) টুল সিলেক্ট করে গাঢ় কমলা রং করুন। ব্লেডিং অপশন Screen এবং অপাসিটি ৪৫ % করে দিন। এখানে হাইড করা যে লেয়ারগুলো দেখা যাচ্ছে আমি আসলে সাদা-কালো গ্রাডিয়েন্ট এ্যাপ্লাই করে দেখেছিলাম। চাইলে আপনারাও করে দেখতে পারেন।
ছবি

ছবি

আরেকটি লেয়ার নিন এবং আগের মত সিলেক্ট করে সাদা-ট্রান্সপারেন্ট গ্রাডিয়েন্ট এ্যাপ্লাই করুন। ব্লেডিং ওভারলে করুন এবং অপাসিটি কমিয়ে দিন। আসল মূল ব্যাপারটা হলো প্রথমে আপনাকে কোন অংশ সিলেক্ট করতে হবে। তারপর তাতে গ্রাডিয়েন্ট ইফেক্ট দিতে হবে। তারপর ব্লেডিং অপশন পরির্বতন করতে হবে । এবং সেই সাথে লেয়ারের অপাসিটিও কমিয়ে দিতে হবে।
হয়ে গেল কালারফুল ব্যাকগ্রাউন্ড :C
ছবি

আমি এই ব্যাকগ্রাউন্ডটাকে Base করে নিচের ছবিগুলো করেছি।
ছবি

ছবি

ছবি

ছবি



লিংকটা এখানে http://forum.amaderprojukti.com/viewtopic.php?f=57&t=3738

ফটোশপ টিউটোরিয়ালঃ প্রাথমিক ধারনা-১

সময়টা শীতের মাঝামাঝি। কাক ডাকা ভোরে চোখে আঙুল ঘষতে ঘষতে রাহাত ছুটছে। যে করেই হোক শান্ত কে ধরতে হবে। নইলে বাকি সারাদিন চষে ফেললেও তার দেখা মিলবে না। কয়েকদিনের চা খরচ টা বাঁচিয়ে একটা সিডি কিনেছে, টিউটোরিয়াল রাইট করতে হবে। সেদিন শান্ত বলছিল নতুন একটা সিডি বের হয়েছে ফটোশপ শেখার । সাত দিনেই নাকি ফটোশপ শিখে ফেলা যাবে। ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। সাতদিনেই.......গত বছর ফটোশপ শিখবে বলে একখানে ভর্তিও হয়েছিল, অথচ কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রতিষ্ঠানটা বন্ধ হয়ে গেল। পুরো টাকাটাই গচ্চা গেল। মায়ের হার গড়ার টাকা। চোখের জল মুছে ফেলে মা যখন টাকাটা বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন রাহাত অবাক হয়ে দ্যাখে সেখানে কি অপরিসীম তৃপ্তি। কিছুদিন আগে অনলাইনে পড়া একটা আর্টিকেলের কথা রাহাতের মনে পড়ে যায়। কেউ একজন লিখেছে আমাদের প্রযুক্তি খাতে নারীদের অবদান কম। রাহাতও মনে মনে ভেবেছে কেন। কিন্তু মায়ের ভরা ভরা চোখদুটোর দিকে চেয়ে সে প্রশ্নের সদুত্তর সে পেয়ে গেছে। আসলে আমাদের দেশে প্রথমে একজন মেয়েকে ভাবা হয় সহধর্মিনী হিসেবে, তার পর মা ।মানুষ হিসেবে তাদের খুব কমই ভাবা হয়। তাদের অনেকের স্বপ্নই পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়না। তাই আমাদের মায়েরা নিজেদের স্বপ্নগুলো কে বুনে দেয় তাদের সন্তানের মাঝে। তাদের স্বপ্নগুলো সময়ের সাথে সাথে চাপা পড়ে যায় । আর বুকের গহবরে স্বপ্নগুলোকে পুষে রেখে ভবিষ্যতের এইসব প্রযুক্তিবিদদের গড়ে তুলতেই মায়েরা জীবনের ষোল আনা কাটিয়ে দেয়। রাহাতের মা সেকেলে। ছবি তেমন একটা তোলেন না। আর বয়সের ভারে চেহারার দৈন্যতায় ক্যামেরার সামনে যে ছবি বাস্তবতা পায় তার ভগ্নদশা দেখে মা আর ক্যামেরার সামনে দাড়াঁবার সাহস পান না। একদিন বড় মেয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্যাখেন জামাই তার মায়ের সাদাকালো ছবি রঙীন করে এনেছে। জামাই বোঝায়, আম্মা , আজকাল কম্পিউটারে সাদাকালো ছবি রঙীন করা যায়। মা শখ করে জামাইয়ের হাতে নিজের একটা ছবি তুলে দেন আর সেই সাথে গুনে গুনে তুলে দেন ১৫০ টাকা। বহু কাঙ্খিত ছবিটা একসময় বাড়িতে আসে। কিন্তু পরিবর্তন বলতে পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ছাড়া আর কিছু রাহাতের নজরে পড়ে না।সামান্য এইটুকুর জন্য ১৫০ টাকা। রাহাতের বুক ভেঙ্গে যায়। মায়ের কত কষ্টের টাকা। রাহাতের ভীষণ শখ কোন একদিন মায়ের সাদাকালো ছবিটা রঙীন করে মাকে চমকে দেবে। যাইহোক,অবশেষে টিউটোরিয়াল সিডি নামের সেই মহা মূল্যবান বস্তুটি হস্তগত হলো। কিন্তু একি, ভেতরটা যে ফাঁকা। ফটোশপের ফটোগুলো ঠিকই আছে কিন্তু আলোচনা বলতে যা করা হয়েছে তা টাইম পাস করা ছাড়া আর কিছুই না।মেজাজটাই বিগড়ে গেল। এমন করে ঠকাবার কোন মানে হয়? ............................... এই হচ্ছে আমাদের বর্তমান গ্রাফিক্স ট্রেনিং চলচিত্র। বাজারে ইদানীং বেশ কিছু টিউটোরিয়ালের সিডি এসেছে যেগুলো এত বেশি প্রফেশনাল যে অনেক ব্যাপারই বোঝা যায় না। আমি নিজেও বড়সড় একটা স্যাঁকা খেয়েছি। তাই বিচ্ছিন্ন ভাবে টিউটোরিয়াল না লিখে আমার মনে হয় প্রথম থেকে শুরু করাই ভাল। এতে করে বিগিনার পর্যায়ে যারা আছেন তারা সহজেই শিখে ফেলতে পারবেন। তাই আমি বেসিক টুলগুলো নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে লেখার একটা চেষ্টা করছি। ভূমিকার জন্য আবারো সবার ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
ছবি

ফটোশপে যে টুলগুলো মূলত: ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলো হলো:

১.Marquee tool (M)
২.Move tool (V)
৩.Lasso tool (L)
৪.Magic wand tool (W)
৫.Crop tool (C)
৬.Slice tool (K)
৭.Healing brush (J)
৮.Brush (B)
৯.Clone stamp (S)
১০.Air brush (Y)
১১.Gradient tool (G)
১২. Eraser tool (E)
১৩. Path selection (A)
১৪.Pen tool (P)
১৫. Text tool (T)
১৬. Eyedropper (I)

আমরা ধারাবাহিক ভাবে এই Tool গুলোর ব্যবহার শিখবো।

প্রথমে আমরা শিখবো Marquee tool (M)। Marquee tool আসলে বিভিন্ন ধরনের সিলেকশন বা শেপ তৈরীর জন্য ব্যবহৃত হয় যেমন: স্কয়ার, রাউন্ডেড ইত্যাদী। এটিকে সংক্ষেপে M দ্বারা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। প্রতিটি টুলস্ এর শর্টকার্ট কমান্ড জানা থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয়। তারচেয়েও বড় কথা এটা আপনার মূল্যবান সময়কে বাঁচাতে সাহায্য করবে। প্রফেশনাল হতে হলে শর্টকার্ট কমান্ড জানা খুবই দরকারী।

ছবি

স্কয়ার শেপ তৈরীর জন্য Rectangular Marquee tool এবং গোলাকার/ বৃত্তাকার শেপ তৈরীর জন্য Elliptical Marquee Tool ব্যবহার করা হয়।

কিভাবে সিলেকশন করা হয়?

ছবি

পিঁপড়ের সারির মত সাদা-কালো ড্যাশ চিন্হগুলো দ্বারা সিলেক্ট করা বোঝা যায়। আমরা যদি ফটোশপের মেন্যু বারে লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো এখানে বেশ কিছু অপশন আছে। আমরা এগুলো দ্বারা সিলেকশনে এ্যাড অথবা বাদ দিতে পারি। লক্ষ্য করুন :
ছবি

এখানে প্রথমটি অর্থ্যাৎ Create a New Selection নতুন সিলেকশনের জন্য।
ছবি

দ্বিতীয়টি Add to a Selection সিলেকশনে নতুন কিছু যোগ করার জন্য।

ছবি

তৃতীয়টি Subtract from Selection সিলেকশন থেকে কোন অংশ বাদ দেবার জন্য।

ছবি
এবং চর্তুথটি Intersect with Selection সিলেকশনের সাথে সমন্বয় ঘটানোর জন্য।

ছবি

এর পর আছে Feather option। Feather ব্যাকগ্রাউন্ডের Pixel এর সাথে সিলেকশনের Pixel গুলোর মধ্যে মসৃণ ভাবে সমন্বয় ঘটায়। আর Anti-aliased option টি রাউন্ডেড সিলেকশনের পিক্সেল গুলোকে মসৃণ করে।


ছবি

ছবি

আমরা যদি পারফেক্ট বৃত্ত তৈরী করতে চাই তাহলে আমাদের Shift key চেপে Elliptical Marquee Tool সিলেক্ট করে ড্রাগ করতে হবে। এছাড়াও স্কয়ার শেপ তৈরীর ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অর্থ্যাৎ Rectangular Marquee Tool সিলেক্ট করে Shift key চেপে ড্রাগ করতে হবে।


ছবি

ছবি



আজকের টিউটোরিয়াল:
প্রথমে একটি ডকুমেন্ট ৪০০x৩১৯ তৈরী করুন। এবার Ractangular Marquee tool সিলেক্ট করে Shift চেপে ধরে একটি স্কয়ার আকুঁন।

ছবি

এবার নতুন একটি লেয়ার নিন এবং Radial Gradient Tool সিলেক্ট করে ড্রাগ করুন।

ছবি
ফলে ইমেজ টি দেখতে এমন হবে।
ছবি
এবার লেয়ারটি সিলেক্ট থাকা অবস্থায় Ctrl+ Click করে ইমেজটি সিলেক্ট করুন। এবার Edit-Stroke থেকে ১/২ পিক্সেল Stroke দিন।
ছবি
এবার ইমেজটি সিলেক্ট থাকা অবস্থায় নতুন আরেকটি লেয়ার নিন। এবং Select-Modify-Contact-6 Pixel কমান্ড দিন। এবার ফোরগ্রাউন্ড কালার সাদা সিলেক্ট করুন ।
ছবি
নতুন লেয়ারটিতে Linear Gradient (White transparent ) টুল সিলেক্ট করে ড্রাগ করুন। ফলে ইমেজটি দেখতে এমন হবে।
ছবি

এখন পেন টুল অথবা লেসো টুল সিলেক্ট করে ইমেজটির খানিকটা অংশ সিলেক্ট করুন। আরেকটি নতুন লেয়ার নিন। এবং আগের মত Linear Gradient (White transparent ) টুল সিলেক্ট করে ড্রাগ করুন।

ছবি

লেয়ার প্যালেট থেকে ব্লেন্ডিং অপশন Normal থেকে Soft Light করে দিন।
ছবি

ফলে ইমেজটি এমন হবে।

ছবি

এবার ইমেজটিতে কিছু টেক্সট যোগ করুন। এবং টেক্সট লেয়ারটিতে ডবল ক্লিক করে Drop Shadow দিন। আপনি চাইলে টেমপ্লেট থেকে কিছু সিমবলও যোগ করতে পারেন।

ছবি
ঠিক একই স্টেপ অনুসরণ করে শাইনি বাটন তৈরী করা যায়।

আজকের টিপস্ :

-পারফেক্ট স্কয়ার বা সার্কেল এর জন্য ফিক্সড এ্যাসপেক্ট রেশিও (fixed-ratio) ১:১।
-Crtl+D চাপলে ডিসিলেক্ট হবে, Ctrl+A চাপলে সর্ম্পূণ ডকুমেন্ট সিলেক্ট হবে এবং লেয়ারের উপর Ctrl+ Click করলে ইমেজ সিলেক্ট হবে।
-Crtl+Backspace চেপে কালার Fill করা যায়।
- কি-বোর্ডে D চাপলে ফোরগ্রাউন্ড কালার কালো এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কালার সাদা হবে। আর X চাপলে ফোরগ্রাউন্ড কালার সাদা এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কালার কালো হবে।

লিংক
: http://forum.amaderprojukti.com/viewtopic.php?f=57&t=3000&p=24497#p24497

Me

Me

About this blog

Hello

This is Fahmida. You may imagine me as a five feet white ball. Completed MBA in Management . ভাললাগে গ্রাফিক্সের টুকিটাকি। শখ ছিল ফটোগ্রাফার হবো কিংবা সাংবাদিক। হইনি কিছুই। পেশায় ব্যাংকার। জন্ম উত্তর বঙ্গে। বসবাস দক্ষিণে। মাঝে মাঝে এক আধটু প্যাঁচাই। যদিও আমার লেখালেখির হাতেখড়ি আপ্র (http://forum.amaderprojukti.com/memberlist.php?mode=viewprofile&u=1094) থেকে তারপরও মাঝে মাঝে প্রথম আলো ব্লগেও মাঝেমাঝে ঢুঁ মারি। নিক আঁধার http://prothom-aloblog.com/users/base/adhar/p1 । আজকাল সচলদের অতিথি হতে ভাল লাগে। নিক অমাবস্যা। ইদানীং টিউরোটিয়াল বিডি'তে লেখার চেষ্টা করছি। গান শোনা, কবিতা পড়তে ভালবাসি। ভালবাসি ব্লাক কফি আর সিলেটের চা-পাতা । এক কথায় Im busy for nothing :)


লাইসেন্স:Licence
by-nc-nd (Creative Commons)

My Blog List