Small journey

ছোট ছোট ঢেউ জুড়েই সুনামীর সৃষ্টি হয়

Showing posts with label ভাললাগে. Show all posts
Showing posts with label ভাললাগে. Show all posts

তুমি ডাক দিলে

একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার।

তুমি ডাক দিলে
নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে
শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো
পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব
পথে এতোটুকু দেরিও করবো না।
তুমি ডাক দিলে
সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো,
তুমি রাজি হলে
যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো।

একবার আমন্রণ পেলে
সব কিছু ফেলে
তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল,
অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে
লোকালয়ে থাকবো না আর
আমরণ পাখি হয়ে যাবো, -খাবো মৌনতা তোমার



হেলাল হাফিজ

Into my own

One of my wishes is that those dark trees,
So old and firm they scarcely show the breeze,
Were not, as 'twere, the merest mask of gloom,
But stretched away unto the edge of doom.

I should not be withheld but that some day
Into their vastness I should steal away,
Fearless of ever finding open land,
Or highway where the slow wheel pours the sand.

I do not see why I should e'er turn back,
Or those should not set forth upon my track
To overtake me, who should miss me here
And long to know if still I held them dear.

They would not find me changed from him they knew--
Only more sure of all I thought was true.
From "A Boy's Will", 1913
Robert Frost

উপেক্ষা

অনন্ত বিরহ চাই, ভালোবেসে কার্পণ্য শিখিনি৷
তোমার উপেক্ষা পেলে অনায়াসে ভুলে যেতে পারি
সমস্ত বোধের উত্স গ্রাস করা প্রেম; যদি চাও
ভুলে যাবো, তুমি শুধু কাছে এসে উপেক্ষা দেখাও৷

নির্মলেন্দু গুণ
দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী; ১৯৭৪

এবারই প্রথম তুমি



ভুলে যাও তুমি পূর্বেও ছিলে
মনে করো এই বিশ্ব নিখিলে
এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না
ছিলে না আকাশে, নদী জলে ঘাসে
ছিলে না পাথরে ঝর্ণার পাশে৷
এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি কিছুতে ছিলে না৷
ফুলেও ছিলে না, ফলেও ছিলে না
নাকে মুখে চোখে চুলেও ছিলে না৷
এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি এখানে ছিলে না
এর আগে তুমি সেখানে ছিলে না
এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না৷
এবারই প্রথম তুমি৷

রাতের পুণ্য লগনে ছিলে না
নীল নবঘন গগনে ছিলে না৷
এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি তুমিও ছিলে না৷
এবারই প্রথম তুমি৷


নির্মলেন্দু গুণ
অচল পদাবলী, ১৯৮২

.....................

কবিতা নাকি মনের কথা বলে, কবিতা নাকি জীবনের কথা বলে। আজ সকালে একটা ম্যাসেজ আসলো যার শুরুটা এমন " Love is a temporary madness "

আর সাঁঝের শেষ প্রহরে আসলো আরেকটা ................


Why can't I stop
Stop thinking of you
I try to fill my day
With lots of things to do

But I continue to drift
Wondering where you are
Do you have any idea
That on my heart you've left a scar

You have priorities
Places you have to be
I'm just so very sad
There's no place for me

I fell in love with you
The keeper of my heart
It's just very hard for me
Since we've been apart

I think you're amazing
A very wonderful man
You pulled me in your web
I became your greatest fan

Just thinking of you
Makes my heart race
There's no one like you
Who brings a glow to my face

Did you ever stop to see
That each time we were together
I would melt within your eyes
A feeling I'll always treasure

When I stop to think
All that we've been through
I can't help but realize
I'm addicted to you.
--------------------




Good-night

Good-night? ah! no; the hour is ill
Which severs those it should unite;
Let us remain together still,
Then it will be good night.

How can I call the lone night good,
Though thy sweet wishes wing its flight?
Be it not said, thought, understood --
Then it will be -- good night.

To hearts which near each other move
From evening close to morning light,
The night is good; because, my love,
They never say good-night.

Shelly

I arise from dreams of thee

রাত্রিটা বিষন্ন। বিষন্ন প্রকৃতি আর মগজের কোষগুলো ...............


I arise from dreams of thee
In the first sweet sleep of night,
When the winds are breathing low,
And the stars are shining bright
I arise from dreams of thee,
And a spirit in my feet
Has led me -- who knows how? --
To thy chamber-window, sweet!

The wandering airs they faint
On the dark, the silent stream, --
The champak odors fall
Like sweet thoughts in a dream,
The nightingale's complaint,
It dies upon her heart,
As I must die on thine,
O, beloved as thou art!

O, lift me from the grass!
I die, I faint, I fall!
Let thy love in kisses rain
On my lips and eyelids pale,
My cheek is cold and white, alas!
My Heart beats loud and fast
Oh! press it close to thine again,
Where it will break at last!


Shelly

তুমি যেখানেই যাও

তোমাকে যখন দেখি তার চেয়ে বেশি দেখি
যখন দেখিনা
শুকনো ফুলের মালা যেরকম বলে দেয়
সে এসেছে
চড়ুই পাখিরা জানে
আমি কার প্রতীক্ষায় বসে আছি
এলাচের দানা জানে
কার ঠোঁট গন্ধময় হবে-
তুমি ব্যস্ত, তুমি একা , তুমি অন্তরাল ভালবাসো
সন্ন্যাসীর মত করে হাহাকার করে উঠি
দেখা দাও, দেখা দাও,
পরমুর্হুতেই ফের চোখ মুছি
হেসে বলি
তুমি যেখানেই যাও সঙ্গে আছি !

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "তুমি যেখানেই যাও " কবিতার শেষ কিছু লাইন।

সোনালী কাবিন

আজ আমি সত্যিই ক্লান্ত .........:(



আর আসবো না বলে দুধের ওপরে ভাসা সর
চামোচে নিংড়ে নিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া
যেন সাদা স্বপ্নের চাদর
বিছিয়েছে পৃথিবীতে।

কেন এতো বুক দোলে? আমি আর আসবো না বলে?
যদিও কাঁপছে হাত তবু ঠিক অভ্যেসের বশে
লিখছি অসংখ্য নাম চেনাজানা
সমস্ত কিছুর।

প্রতিটি নামের শেষে, আসবো না।
পাখি, আমি আসবো না।
নদী আমি আসবো না।
নারী, আর আসবো না, বোন।

আর আসবো না বলে মিছিলের প্রথম পতাকা
তুলে নিই হাতে।
আর আসবো না বলে
সংগঠিত করে তুলি মানুষের ভিতরে মানুষ।
কথার ভেতরে কথা গেঁথে দেওয়া, কেন?
আসবো না বলেই।
বুকের মধ্যে বুক ধরে রাখা, কেন?
আর আসবো না বলেই।

আজ অতৃপ্তির পাশে বিদায়ের বিষণ্ণ রুমালে
কে তুলে অক্ষর কালো, ‘আসবো না’
সুখ, আমি আসবো না।
দুঃখ, আমি আসবো না।
প্রেম, হে কাম, হে কবিতা আমার
তোমরা কি মাইল পোস্ট না ফেরার পথের ওপর?

———————————–


আল মাহমুদ

স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল



পুরনো পকেট থেকে উঠে এল কবেকার শুকনো গোলাপ |
কবেকার ? কার দেওয়া ? কোন্ মাসে ? বসন্তে না শীতে ?
গোলাপের মৃতদেহে তার পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন নেই |

স্মৃতি কি আমারও আছে ? স্মৃতি কি গুছিয়ে রাখা আছে
বইয়ের তাকের মত, লং প্লেইং রেকর্ড-ক্যাসেটে
যে-রকম সুসংবদ্ধ নথীভুক্ত থাকে গান, আলাপচারীতা ?

আমার স্মৃতিরা বড় উচ্ছৃঙ্খল, দমকা হাওয়া যেন
লুকোচুরি, ভাঙাভাঙি, ওলোটপালটে মহাখুশি
দুঃখেরও দুপুরে গায়, গাইতে পারে, আনন্দ-ভৈরবী |

আকাঙ্খার ডানাগুলি মিশে গেছে আকাশের অভ্রে ও আবীরে
আগুনের দিনগুলি মিশে গেছে সদ্যজাত ঘাসের সবুজে
প্রিয়তম মুখগুলি মিশে গেছে সমুদ্রের ভিতরের নীলে |

স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল, দুহাজার বছরেও সব মনে রাখে
ব্যাধের মতন জানে অরণ্যের আদ্যোপান্ত মূর্তি ও মর্মর |
অথচ কাল বা পরশু কে ডেকে গোলাপ দিল কিছুতে বলবে না |

পুর্ণেন্দু পত্রী

কৃষ্ণকলি

রবীন্দ্রনাথ কেন যে মেঘরংয়া ছেলেদের ব্যাপারে কিছু লিখলো না :(


কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের 'পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে
ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,
শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে
কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই।
আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু
শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

পূবে বাতাস এল হঠাত্‍‌ ধেয়ে,
ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ।
আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা,
মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ।
আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে,
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

এমনি করে কাজল কালো মেঘ
জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ়মাসে নামে তমাল-বনে।
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাত্‍‌ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
আর যা বলে বলুক অন্য লোক।
দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস,
লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো
ছোট ঘাসফুলের জন্যে
একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে
উড়ে যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে
একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
দোয়েলের শিসের জন্যে
শিশুর গালের একটি টোলের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো কারো চোখের মণিতে
গেঁথে থাকা একবিন্দু অশ্রুর জন্যে
একফোঁটা রৌদ্রের জন্যে

আমি সম্ভবতখুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
এক কণা জ্যোৎস্নার জন্যে
এক টুকরো মেঘের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো টাওয়ারের একুশ তলায়
হারিয়ে যাওয়া একটি প্রজাপতির জন্যে
এক ফোঁটা সবুজের জন্যে

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে
খুব ছোট দুঃখের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে
একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে
একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে।


হুমায়ুন আজাদ




যাত্রাভঙ্গ

হাত বাড়িয়ে ছুইনা তোকে মন বাড়িয়ে ছুই
দুইকে আমি এক করিনা এক কে করি দুই
হেমের মাঝে শুইনা যবে প্রেমের মাঝে শুই
তুই কেমন করে যাবি?
পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া, আমাকে তুই পাবি
তবুও তুই বলিস যদি যাই
দেখবি তোর সম্মুখে পথ নাই
তখন আমি একটু ছোব
হাত বাড়িয়ে জড়াব তোর বিদায় দুটি পায়ে
তুই উঠবি আমার নায়ে? আমার বৈতরণির নায়ে
নায়ের মাঝে বসবো বটে নায়ের মাঝে শোব
হাত দিয়েতো ছোবনা মুখ, দুঃখ দিয়ে ছোব।

নির্মলেন্দু গুণ

Friend

Art thou abroad on this stormy night
on thy journey of love, my friend?
The sky groans like one in despair.

I have no sleep tonight.
Ever and again I open my door and look out on
the darkness, my friend!

I can see nothing before me.
I wonder where lies thy path!

By what dim shore of the ink-black river,
by what far edge of the frowning forest,
through what mazy depth of gloom art thou threading
thy course to come to me, my friend?

Rabindronath Tagore

Stoping by Woods on a Snowy Evening

দিনগুলো তার মত করেই যাচ্ছে আর আমি আমার মতই আছি। একটা কাজ শুরু করেছিলাম অনেকদিন আগে,শেষটা কিছুতেই নামাতে পারছিনা। অথচ মানুষ হিসেবে এখনো অনেক কিছু করার বাকি রয়ে গেছে। ফ্রস্টের শেষের লাইনগুলো পড়লে বুকের ভেতরটা হিম হয়ে আসে , miles to go before I sleep.........
Whose woods these are I think I know.
His house is in the village, though;
He will not see me stopping here
To watch his woods fill up with snow.
My little horse must think it queer
To stop without a farmhouse near
Between the woods and frozen lake
The darkest evening of the year.

He gives his harness bells a shake
To ask if there is some mistake.
The only other sound's the sweep
Of easy wind and downy flake.
The woods are lovely, dark and deep,
But I have promises to keep,
And miles to go before I sleep,
And miles to go before I sleep.

Robert Frost

গুচ্ছ কবিতা

মাঝে মাঝে ছেলেমানুষী কবিতা ভাললাগে। কদিন ধরে কার্নেগীর রচনাসমগ্র পড়তে পড়তে মন বিষন্ন হয়ে উঠেছে। আজ হঠাৎ রুদ্র'র কবিতা মনে পড়ছে -


১.

থাকুক তোমার একটু স্মৃতি থাকুক

একলা থাকার খুব দুপুরে

একটি ঘুঘু ডাকুক



২.

দিচ্ছো ভীষণ যন্ত্রণা

বুঝতে কেন পাচ্ছো না ছাই

মানুষ আমি, যন্ত্র না!



৩.

চোখ কেড়েছে চোখ

উড়িয়ে দিলাম ঝরা পাতার শোক।

রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্

কার প্রতীক্ষায় আছো


( প্রতিটি মানুষের জীবনেই বোধহয় এমন কিছু সময় আসে যখন অতিপ্রিয় জীবনটাও অর্থহীন মনে হয়।বি.বি.এ পড়ার সময়ে একদিন এক ইয়ারমেট প্রশ্ন করেছিল ," কেন দীপ জ্বেলে রাখি? কেন আশায় বুক বেঁধে রাখি ?" কোন সদুত্তর দিতে পারিনি। জীবনের অনেক অধ্যায় আছে যার পরিসমাপ্তি নেই। জীবনের অনেক চাওয়া আছে যার বাস্তবতা নেই। জীবনের অনেক গল্প আছে যার পরিণতি নেই। তবুও সময় তার মত করেই বয়ে যায় আর অনেকের মত আমিও কাল হবে এই প্রতীক্ষায় আরেকটা কালের অপেক্ষায় থাকি।৩৬৫ সূর্যডোবা মানে অনেকটা সময়। এক একটা সূর্যস্নানের সাথে স্রষ্টা চাইলে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু সব জীবনে গতি আসেনা। সব স্বপ্ন সূর্যওঠা দেখতে পায়না ।মাঝরাতে আচমকা জেগে উঠেই এলোমেলো লাগছে। কবির কথার রেশ ধরে নিজেকেই প্রশ্ন করি ,বলো, কার প্রতীক্ষায় আছো হে আমার দুঃখী শব্দাবলী, ঘুমহীন? )



বলো, কার প্রতীক্ষায় আছো হে আমার দুঃখী শব্দাবলী?

আমার ভেতরে নিশিদিন অগণিত শিশু

পাঠশালা যায় আসে বানায় রঙিন স্বপ্ন কবিতার বই

নিপুণ বাঁধাই জরিমোড়া।

নিশিদিন আমার ভেতরে শব্দ নিয়ে লুফোলুফি হয়

কৌতুক জলসায় মাতে গ্রাম্যবধুরা লোকালয়ে, স্বার্থপর

পারিনি তাদের আমি পরাতে এখনো কোনো

সুনিপুন পোশাক-আশাক, পারিনি দুলাতে আজো

কর্ণমূলে লোভনীয় কোনো মণিহার।



কার প্রতীক্ষায় কাটে বেলা? আমার আকাশে ওঠে

অগণিত জ্বলজ্বলে তারা, ওঠে চাঁদ মধ্য-রজনীতে

কোনোদিন ঢেলে দেয় জোৎস্না ঘরময়,

কুয়াশায় ভিজে বুক নাভিমূলে কোমল-কোমল পেলবতা

আড়ষ্ট কপোল-জোড় ভেজাই আদরে নির্দ্বিধায়,

বুলাতে পারিনি তবু পরিত্যক্ত শিয়রে তাদের

কোনোদিনও মোমের আঙুল।



বলো কার প্রতীক্ষায় হে আমার শব্দাবলী গনগনে

জাগ্রত শিশুর কান্না শুনে কাটাও রজনী অবিশ্রাম?

ভেতরে আমার নিশিদিন পদধ্বনি বেজে ওঠে কার,

কার নিত্য আগমন আমাকে ভুলিয়ে রেখে বেশ

নিয়মিত ঘর-গেরস্থালী সাজায় আদরে,বলো

কার প্রতীক্ষায় আছো হে আমার দুঃখী শব্দাবলী

ঘুমহীন?

বিমল গুহ

প্রতিদান

( সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ শরীরটা বিদ্রোহ করে উঠলো।কিছুতেই ঘুম আসছে না। ভাঙ্গাচোরা শরীরের ভারে ম্রিয়মান মগজের কোষ থেকে থেকে থেকে ভেসে আসছে কিছু চরণ । এস.এস.সি'র বাংলা বইয়ে ছিল। তারই পুরোটা তুলে দিলাম আকাশের ঠিকানায় )


আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।

যে মোরে করিল পথের বিবাগী;
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি;

দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর;
আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাঁধি তার ঘর।

আমার এ কুল ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি তার কুল বাঁধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি;

যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ,
আমি দেই তারে বুক ভরা গান,

কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।

মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে আমি তার বুক ভরি,
রঙ্গীন ফুলের সোহাগ-জড়ানো ফুল-মালঞ্চ ধরি।

যে মুখে সে কহে নিঠুরিয়া বাণী,
আমি লয়ে সখী তার মুখখানি,

কত ঠাঁই হতে কত কি যে আনি সাজাই নিরন্তর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।

জসীমউদ্দীন

প্রিয়তমাসু

খুব প্রিয় একটি কবিতা, আকাশের ঠিকানায় তুলে দিলাম যদি কারো ভাললেগে যায় ..........

তোমার দু'হাতে ফুল তুলে দেবো এই ছিল সাধ
হাতে নিয়ে হাত আংটি পরাবো এই ছিল সাধ
তুমি শুধু বলো , ফুল নয় , চাই ভাত , দাও ভাত।
আংটিও নয় ভাতে ভরে দাও আমার দু'হাত।

সাগরের তীরে বসবো দু'জন এই ছিল সাধ
মনে ছিল সাধ তোমাকে দেখাবো আকাশের চাঁদ
তুমি শুধু বলো সাগর চাইনা
আকাশের চাঁদ কি হবে আমার
একটি পাতার ঘর তুলে দাও রাতে ঘুমোবার।

মনে ছিল সাধ গজোমতি হার
পরিয়ে তোমায় ঘরে নিয়ে যাবো,
তুমি বলো , দাও ছেঁড়া কাঁথা ছুঁড়ে লজ্জা বাঁচাবো।
মনে সাধ ছিল ময়ুরপঙ্খী নায়ে তুলে নিয়ে
সাগরে ভাসবো, তুমি দুটি হাত সামনে এগিয়ে
বললে, আমার খেয়া পারাবার কড়ি হাতে নাই
সারাদিন এই পারাপার আছে কিছু কড়ি চাই।

তোমাকে আমার রানী করে নেবো এই সাধ ছিল
তোমাকে আমার ঘরণী বানাবো এই সাধ ছিল
মনে সাধ ছিলো সঙ্গিনী হবে সখের মেলায়
তুমি মেতে গেলে কালো অঞ্চলে ভাত
কুড়োবার মরণ খেলায়।


আহসান হাবীব

একবার বলেছি তোমাকে

কবিতাটার প্রথম চার লাইন খুবই প্রিয় । সত্যিই তো একবার যা বলেছি তা কি ফেরানো যায় ? নাকি ফেরানো উচিত ? আমি বলি, ভালবাসার অপর পিঠেও ভালবাসা আছে।



"একবার বলেছি তোমাকে আমি ভালোবাসি
একবার বলেছি তোমাকে আমি , তোমাকেই ভালবাসি।
বলো
এখন সে কথা আমি ফেরাবো কেমনে !
আমি একবার বলেছি তোমাকে ....
এখন তোমাকে আমি ঘৃণা করি।
এখন তোমার
দৃষ্টির কবলে এলে ক্ষতস্থান জ্বলে জ্বলে ওঠে।
তোমার সান্নিধ্যে এলে তুমি উষ্ণ নাভিমূল থেকে
বাতাসে ছড়াও তীব্র সাপিনীর তরল নিশ্বাস।
আমি যতবার ছুটতে যাই , তোমার দৃষ্টির বাইরে যেতে চাই, তুমি
দু'চোখে কী ইন্দ্রজাল মেলে রাখো ! আমি ছুটতেও পারি না
আমি ফেরাতে পারি না কথা
আমি একবার বলেছি, তোমাকে ....

সম্রাজ্ঞীর বেশে আছো । নতজানু আমি
দাসানুদাসের ভঙ্গী করপুটে, দেখি
তোমার মুখের রেখা অবিচল, স্হির জঙ্ঘা তোলে না টন্কার,
তুমি পবিত্রতা পবিত্রতা বলে
অস্পষ্ট চীৎকার করো , তুমি
কেবলি মালিন্য দেখো, অশ্লীলতা ক্রমান্বয়ে ঘৃণা
ক্রোধ বাড়ে, উত্তেজনা বাড়ে
নামে উষ্ণ জলস্রোত। তুমি
এইভাবে প্রবল ঘৃণায়
আমাকে ভাসিয়ে দিয়ে অহন্কার রাখতে চাও অটুট। তবুও
পৃথিবীতে আছে কিছু মানুষের অবস্থান, তারা
অপমানে ধন্য হয়
উপেক্ষায় ঋজু ;
তারা স্বভাব - কাঙাল ! যদি
একবার বলে তবে ফেরাতে পারে না। আমি
ফেরাতে পারি না । আমি
একবার বলেছি, তোমাকে আমি ভালোবাসি।


ভালোবাসা, ভালোবাসা, ভালোবাসা !
ভালোবাসা ! সে কেমন, কোন দ্রীপ স্বর্গীয় প্রতাপ
যার মৃত্ব্যু ন্ই
জন্মান্তর নেই ?


আহসান হাবীব

Me

Me

About this blog

Hello

This is Fahmida. You may imagine me as a five feet white ball. Completed MBA in Management . ভাললাগে গ্রাফিক্সের টুকিটাকি। শখ ছিল ফটোগ্রাফার হবো কিংবা সাংবাদিক। হইনি কিছুই। পেশায় ব্যাংকার। জন্ম উত্তর বঙ্গে। বসবাস দক্ষিণে। মাঝে মাঝে এক আধটু প্যাঁচাই। যদিও আমার লেখালেখির হাতেখড়ি আপ্র (http://forum.amaderprojukti.com/memberlist.php?mode=viewprofile&u=1094) থেকে তারপরও মাঝে মাঝে প্রথম আলো ব্লগেও মাঝেমাঝে ঢুঁ মারি। নিক আঁধার http://prothom-aloblog.com/users/base/adhar/p1 । আজকাল সচলদের অতিথি হতে ভাল লাগে। নিক অমাবস্যা। ইদানীং টিউরোটিয়াল বিডি'তে লেখার চেষ্টা করছি। গান শোনা, কবিতা পড়তে ভালবাসি। ভালবাসি ব্লাক কফি আর সিলেটের চা-পাতা । এক কথায় Im busy for nothing :)


লাইসেন্স:Licence
by-nc-nd (Creative Commons)

My Blog List